12:30 AM, 13 November, 2025

কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজী ও প্রতারণা করা একজন আমান রহমান

inbound8410985260280229647

নাম তার আমানত রহমান।ঢাকায় এসে নাম পরিবর্তন করে বনে যান আমান রহমান। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতী গ্রামের মৃত পুলিশ কনস্টবলের মতিয়ার রহমানের ছেলে আমান রহমান।

এলাকায় চিহ্নিত মাদকাসক্ত, চোর ডাকাতদের সঙ্গে মিশে অপরাধ অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে, একটা সময়ে এলাকাবাসীর চাপে, পুলিশের ভয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। ২০০১ সালে ঢাকায় আসেন, ঢাকায় আপন মামা খসরুর মালিবাগ চৌধুরী পাড়া মেস বাসায় ওঠেন, মামা খসরু বাসায় আশ্রয় দিয়ে ঢাকার শান্তি নগরের একটি গ্রিলের দোকানে, গ্রিল মিস্ত্রীর হেলপার হিসাবে কাজের ব্যবস্থা করে দেন, কাজ করার সুবাদে পরিচিত হন শান্তিনগরের চিন্হিত পেশাদার মাদকাসক্ত চোর ছিনতাইকারী চক্রের সাথে, পূর্বের ন্যয় জড়িয়ে পড়েন মাদকের নেশায়, মাদকের টাকা যোগাড় করতে ছোট-খাটো চুরি ছিনতাই করতে শুরু করে দেন, মামার মেস বাসায় থাকা অবস্থায় ধর্ষণের উদ্দেশ্য কাজের বুয়াকে জাপটে ধরেন।কাজের বুয়া এ নিয়ে খিলগাঁও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।তার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এসে, আমান কে না পেয়ে ধরে নিয়ে যায় মামা খসরুকে। এলাকা ছেড়ে গাঢাকা দিয়ে অবস্থান নেয় মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রোজেক্ট এক বন্ধুর বাসায়।

সেখানেও বেশিদিন টিকতে পারেননি। পতিতাদের দিয়ে দেহব্যবসা করতে গিয়ে এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে এখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে চলে আসেন উত্তর বাড্ডা এলাকার একটি মেস বাসায়।বাসার মালিকের স্ত্রী ৪৫ উর্ধ নারীর সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। ধনসম্পত্তির লোভে বর্তমানে এক শিল্পপতির স্ত্রী ৫০-৫৫ উর্দ্ধ মহিলার সাথে নিজেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা পরিচয়ে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন একটি সূত্র থেকে জানা যায়।

লোভ লালসার বশবর্তী হয়ে নিজেকে বড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে একবন্ধুর বোন সেঁজুতি কে বিয়ে করেন।দু-বছরের মাথায় জন্ম নেয় ১টি পুত্র সন্তান। দুই তিন বছরের মধ্যে স্ত্রী সেঁজুতি স্বামী আমানের সকল অপরাধ অপকর্ম স্বভাব চরিত্রের বিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত হন। হেরোইন মদ গাঁজা ফেনসিডিল খেয়ে এসে প্রায় প্রতিদিনই স্ত্রী সেঁজুতি কে বেধড়ক মারপিট অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে! মারের জ্বালা যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে কোলের শিশু সন্তানকে নিয়ে স্ত্রী সেঁজুতি তার বাপের বাড়ি চলে যান, সেই থেকে আজ পর্যন্ত আমানের সংসারে আর ফিরে আসেনি।

চাঁদাবাজি, মাদক,দেহব্যবসা চুরি ছিনতাইয়ে গত দশ এগারো বছরে হাত পাকিয়ে ফেলেন আমান।২০১১ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে গভীর রাতে ছিনতাই করতে গিয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ছাত্রদলের সভাপতি মিঠু ও অন্য এক ছিনতাইকারী সহ পিস্তল, মাদক ও প্রাইভেটকার নিয়ে, মতিঝিলের শাপলা চত্বরের চেকপোস্ট পুলিশের হাতে কাছে পড়েন।এ ঘটনায় মতিঝিল থানা পুলিশ ১টি অস্ত্র ও মাদক,আইনে মামলা দায়ের করেন , ততকালীন সময়ে সমস্ত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা অস্ত্র,মাদক ও প্রাইভেটকারসহ তিন ছিনতাইকারীর ছবি, সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ মামলায় দীর্ঘ দিন জেলে থাকলেও অর্থাভাবে জামিন মুক্ত হতে পারেনি।

পরে বিদেশগামী একবন্ধুর দয়ায় বাবু নামের এক বন্ধু দেশে তিন-চার মাস অবস্থান করে চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে জামিনে ছাড়িয়ে আনেন। পরে বন্ধু বাবুর সাথেও প্রতারণা করে।জামিনে মুক্ত হয়ে নিজের অপরাধ অপকর্ম ও ছিনতাই মামলা থেকে রেহাই পেতে, যুবলীগ কে টার্গেট করেন। নেমে পড়েন যুবলীগের রাজনীতিতে বিভিন্ন সভা সমাবেশ অংশগ্রহণ করে নিজের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের কখনো রামপুরা যুবলীগের সভাপতি , কখনো সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিতে শুরু করেন, নিয়মিত যুবলীগের কেন্দ্রীয় অফিসে আসা যাওয়া করতে থাকেন।

ডাকসাইটের নেতাদের সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিতে শুরু করেন। এরমধ্যে হাইভোল্ট পাওয়ারফুল সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসের ফুটফরমাশ খেটে তার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন, এদিকে কাজী আনিসের গ্রামের বাড়ি নগরকান্দার পাশের উপজেলা মুকসুদপুর হওয়ায় বিভিন্ন প্রোগ্রামে কাজী আনিসের পিছু পিছু দৌড় ঝাপ শুরু করেন, উদ্দেশ্য মামলা থেকে রেহাই পাওয়া কাওরান বাজারে দেহব্যবসা মাদকের ব্যবসা চাঁদাবাজি চুরি ছিনতাই করা।

তখনকার সময়ে অধিক ক্ষমতাবান কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা কাজী আনিসের আশীর্বাদে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজী, কাওরান বাজারে মাদক ব্যবসা পাওনা টাকা আদায় সেটিং ফিটিং দেওয়া শুরু করে দেয়,পাওনাদার কে কোন মতে দেনাদার মুখোমুখি করতে পারলেই কেল্লাফতে। পাওনাদারের উদ্ধারকৃত টাকার যৎসামান্য ধরিয়ে দিয়ে পুরো টাকাই হজম করার পেশায় পরিনত হয়। যাদের নিয়ে পাওনা টাকা আদায় করতে যান, তাদের সাথে কৌশলে প্রতারণা করে নামকাওয়াস্তে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে, সব টাকা নিয়ে একাই হজম করেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, সাথে থাকা বন্ধু বান্ধব এমন কেউ নেই যে যাকে আমান ন্যায্য হিসসা না দিয়ে। ঠকিয়েছেন বলে জানা যায়।এ বিষয়ে তার গ্রামের বাড়িতে অনুসন্ধানে গেলে স্থানীয় লোকজন জানান, আমানত একটা পেশাদার ছিনতাইকারী,মাদকসেবি ও প্রতারক।এইতো মাস চারেক আগে দূরসম্পর্কের ভাগিনা নগরকান্দার ছাগলদীর তুহিনের কাজ থেকে ব্যবসার কথা বলে করে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

গ্রামবাসী আরও জানান, আমানত ওর ছোট ভাই মামুন বা ওদের পরিবারের কেউই কখনো কোন দিনই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি সাথে জড়িত ছিলো না। ওর আচার-আচরণে জামাত বিএনপির গন্ধ পাওয়া যায়।একজন গ্রামবাসী নাম পরিচয় গোপন রাখার স্বর্তে বলেন ঢাকায় চুরি ডাকাতি ছিনতাই সঙ্গে জড়িত রয়েছে, একাধিক মামলায় জেলও খেটেছে বহুবার।

কেন্দ্রীয় যুবলীগ সাবেক সদস্য পরিচয়টা নিশ্চিত হতে একাধিক নেতার সাথে যোগাযোগ করে জানা যায় আমানের পরিচয়টা সম্পূর্ণ ভূয়া বানোয়াট বলে জানান এবং এ বিষয়ে যুবলীগ নেতারা বলেন নিকটবর্তী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাকে ধরে সোপর্দ করার পরামর্শ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *