9:55 PM, 12 November, 2025

হুমায়ুন ফরীদি পুরাণ

inbound6209950604377970854

বিনোদন ডেস্কঃ

ফাগুনের এক মাতাল হাওয়ার দিনে প্রকৃতি যখন নবরূপে সাজার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন বাংলাদেশের শোবিজপাড়ায় উঠেছিল শোকের মাতম। গুণী অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি পাড়ি জমিয়েছিলেন না ফেরার দেশে। সেদিন হুমায়ুন ফরীদি দেহান্তর হলেও তিনি এখনও বেঁচে আছেন অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে। আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) তার দশম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের এই দিনেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।

দেশীয় মিডিয়ায় অনেক অভিনেতা এসেছেন। আগামী দিনেও আসবেন। কিন্তু ফরীদির মতো দাপুটে অভিনেতা খুব কমই পাওয়া যায়। কালের সাক্ষী হয়ে ফরীদি বেঁচে থাকবেন ভক্তকূলের হৃদয়ে।

হুমায়ুন ফরীদির জন্ম ঢাকার নারিন্দায়। বাবার নাম এ টি এম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে ফরীদির অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।

১৯৬৫ সালে পিতার চাকরির সুবাধে মাদারিপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ সময় মাদারিপুর থেকেই নাট্যজগতে প্রবেশ করেন তিনি। তার নাট্যঙ্গনের গুরু বাশার মাহমুদ।

তৎকালীন সময়ে নাট্যকার বাশার মাহমুদের শিল্পী নাট্যগোষ্ঠী নামের একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কল্যাণ মিত্রের ‘ত্রিরত্ন’ নাটকে ‘রত্ন’ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে জীবনে প্রথম দর্শকদের সামনে উপস্থিতি তার। একই সংগঠনের সদস্য হয়ে ‘টাকা আনা পাই’, ‘দায়ী কে’, ‘সমাপ্তি’, ‘অবিচার’সহ ছয়টি মঞ্চ নাটকে অংশ নেন।

১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণের পর চাঁদপুর সরকারি কলেজ এ পড়াশোনা করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি আল-বেরুনী হলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল-দীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।

১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নাট্য উৎসবে ফরীদি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। আর এ উৎসবের মাধ্যমেই তিনি নাট্যাঙ্গনে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন।

এরপর তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় শুরু করেন। হুমায়ুন ফরীদি অভিনীত উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে নিখোঁজ সংবাদ, হঠাৎ একদিন, পাথর সময়, সংশপ্তক, সমুদ্রে গাংচিল, কাছের মানুষ, মোহনা, নীলনকশাল সন্ধানে, দূরবীণ দিয়ে দেখুন, ভাঙনের শব্দ শুনি, কোথাও কেউ নেই, সাত আসমানের সিঁড়ি, সেতু কাহিনী, ভবেরহাট, শৃঙ্খল, জহুরা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, প্রতিধ্বনি, গুপ্তধন, সেই চোখ, অক্টোপাস, বকুলপুর কত দূর, মানিক চোর, আমাদের নুরুল হুদা।

৯০ দশকে হুমায়ুন ফরীদি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- সন্ত্রাস, দহন, লড়াকু, দিনমজুর, বীর পুরুষ, বিশ্বপ্রেমিক, আজকের হিটলার, দুর্জয়, শাসন, আঞ্জুমান, আনন্দ অশ্রু, মায়ের অধিকার, আসামি বধূ, একাত্তরের যীশু, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, ভালোবাসি তোমাকে, কখনও মেঘ কখনো বৃষ্টি, প্রবেশ নিষেধ, ভণ্ড, অধিকার চাই, মিথ্যার মৃত্যু, বিদ্রোহী চারিদিকে, মনে পড়ে তোমাকে, ব্যাচেলর, জয়যাত্রা, শ্যামল ছায়া, দূরত্ব, কি যাদু করিলা, মেহেরজান প্রভৃতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *