3:56 AM, 13 November, 2025

সরকারি গাড়ি নিয়ে রংপুরে ঘুরতে গেলেন রৌমারীর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা!

MRS20021006

করনোর দুর্যোগের সময়ে সরকারি হাসপাতাল গুলোর চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার জন্য কড়া নির্দেশনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সরকারি ওই নির্দেশনাকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে রংপুরে বেড়াতে ও ঈদের কেনাকাটার জন্য রংপুরে গেলেন রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. (পরিবার পরিকল্পনা) ডা. মোমেনুল ইসলাম। একই সঙ্গে চিকিৎসাসেবা ও রোগীদের মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়ে হাসপাতালের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সের চালককেও সঙ্গে নিয়ে গেছেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ওই কর্মকান্ডে এলাকাবাসির মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোমেনুল ইসলাম বৃহষ্পতিবার (৭ মে) তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সরকারি গাড়ি নিয়ে টাঙ্গাইল বগুড়া হয়ে রংপুরে বেড়াতে যান। আজ শুক্রবার পর্যন্ত তিনি রংপুরে অবস্থান করছেন। উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তাদের জন্য সরকারি ভাবে একটা করে জীপগাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে বা অন্য জেলায় ভ্রমণ করার কোনো নিয়ম না থাকলেও তা তিনি মানছেন না। এবং কি এই গাড়ির গায়ে “সরকারি সম্পত্তি” লেখা সীলমোহরটি গাড়ি থেকে তুলে ফেলে। তার ওপর হাসপাতালে রোগী আনা নেওয়ার জন্য একমাত্র অ্যাম্বুলেন্স’র চালককে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কারনে জরুরী ও মূমুহুর্ষ রোগীরা রয়েছেন হুমকিতে।

হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, করোনার এই মহামারীতে ডাক্তাদের কর্মস্থল ত্যাগ করার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগীও ভর্তি রয়েছে। এ অবস্থায় কর্মস্থল ত্যাগ করে তাও আবার অ্যাম্বুলেন্সের চালককে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরাও হতাশ হয়ে পড়েছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে কর্মস্থল ত্যাগ না করার জন্য। হাসপাতালের একজন কর্মচারী বলেন, ‘সরকারি গাড়ি, সরকারি টাকায় তেল খরচ করে সেই টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া হয়ে রংপুরে বেড়াতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।’

হাসপাতালের প্রধান সহকারি কাম হিসাব রক্ষকের দায়িত্বে থাকা এমটিইপিআই নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমি তো জানি স্যার ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেয়ার জন্য গেছেন।’ এদিকে একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সের চালক না থাকার কারনে আজ শুক্রবার একাধিক জরুরী রোগী হাসপাতালে এসে বিপদে পড়েন। তাদের মধ্যে হার্ডে সমস্যায় এক রোগী রৌমারীতে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বকশীগঞ্জ থেকে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া নিয়ে ঢাকায় রওনা হন। এ প্রসঙ্গে রোগীর স্বজন সাকিব হাসান তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের মৃত্যুর মুখে ফেলে কিভাবে অ্যাম্বুলেন্স চালককে সঙ্গে নিয়ে রংপুরে বেড়াতে গেলেন তা তদন্তের দাবি জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোমেনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার পরিবার নিয়ে একটা কাজে আছি রংপুরে। তাছাড়া কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন অফিসে শনিবার এক সভায় অংশ গ্রহণ করে বাড়ি ফিরব।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সের চালককে সঙ্গে আনা হয়েছে অন্য একটি কাজে।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন হাবিবুর রহমান বলেন, ‘রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সরকারি গাড়ি আর অ্যাম্বুলেন্সের চালককে নিয়ে বগুড়া রংপুরে বেড়াতে যাওয়ার বিষষটি আমি অবগত নই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *