1:27 PM, 13 November, 2025

গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৬৩ বাড়ি ফিরে গেছে ৪ জন আক্রান্ত ৫

IMG_0153

গাইবান্ধায় সোমবার নতুন করে করোনা ভাইরাস সন্দেহে গত ২৪ ঘন্টায় কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট গ্রামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে গত ২৪ ঘন্টায় ১৬৩ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে এবং ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় ৪ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে আরও নতুন ৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তদুপরি এ জেলায় এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৫ জনের মধ্যে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেসনে ৩ জন এবং সুন্দরগঞ্জ ও সাদুল্যাপুরের হবিবুল্যাহপুর গ্রামের হোম কোয়ারেন্টাইনে ২ জনকে রাখা হয়। এছাড়া এগ্রামের ১৫ হতে ১৬ টি পরিবারকে লকডাউনের আওতায় নেওয়া হয়। জেলা জুড়ে মানুষকে ঘরমূখী করতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ও পুলিশ বাহিনী সদস্যরাসহ অন্যান্য আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন । কিন্তু জেলার গ্রামীন জনপদের মানুষ গুলোকে কিছুতেই সচেতন করা সম্ভব হচ্ছে না । তারা বরাবরের নেয় ইচ্ছাকৃত জনসমাগম ঘটিয়ে চলছে। ছোট বড় হাট বাজার গুলোতে অযাথা ভীড় জমাচ্ছে। করোনা সংক্রমন রোধে নেই কোন সাবধানতা। জেলায় ৫ জন আইসোলিসনে থাকলেও ইতিমধ্য ১০০ শয্যার আইসোলিসন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট গ্রামের মোঃ ফজলু মিয়ার ছেলে আব্দুর রাজ্জাক রোববার সন্ধ্যায় তার নিজ বাড়িতে মারা গেছে। এদিকে রাজ্জাক করোনা ভাইরাসে মারা গেছে এই সন্দেহে একটি মেডিকেল টিম নিয়ে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে সরকারি বিধিমোতাবেক গাইবান্ধা ইসলামী ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষিত ঈমামদের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফন করা হয়। মৃত ব্যক্তির বাড়ির আশেপাশে ৬টি পরিবারকে গাইবান্ধা সদর থানার পুলিশ হোমকোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দেয়। এছাড়া মৃত ব্যক্তি জীবিত থাকাকালীন যে চিকিৎসক তার চিকিৎসা করেছিল তাকেও হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনার দেয়া হয়েছে বলে সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ জানান।

করোনা ভাইরাসের লক ডাউনের সময় কর্মহীন ও দুঃস্থ মানুষের মধ্যে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সোমবার জেলা প্রশাসকের এক প্রেস রিলিজে জানা গেছে, এ পর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ২২ হাজার ৮শ’ ৫০ জন দরিদ্র শ্রমজীবি কৃষক পরিবারের মধ্যে ২শ’ ২৮ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ও ১৯ হাজার ৪শ’ পরিবারের মধ্যে ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। এছাড়া বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ভান্ডারে ২শ’ ৪২ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে।

করোনা ভাইরাসের লক ডাউনের সময় কর্মহীন দুঃস্থদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে বিশেষ ওএমএস কর্মসূচির আওতায় গাইবান্ধায় সোমবার ১০ টাকা মূল্যের চাল বিক্রয় শুরু হয়েছে। প্রতি সপ্তাহের রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহ¯পতিবার এই তিনদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত পৌর এলাকার নির্দিষ্ট ৫টি পয়েন্টে এই চাল বিক্রি করা হবে। গাইবান্ধা পৌরসভার যে সমস্ত এলাকায় চাল বিতরণ করা হবে সেগুলো হচ্ছে খানকা শরীফ মাদ্রাসা মাঠ, ডেভিড কো¤পানিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জুবলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ও সুন্দরজাহান মোড়। চাল ক্রয়ের সময় ক্রেতাকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি প্রদান করতে হবে। করোনা ভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে চাল নেয়ার সময় প্রতিটি ক্রেতাকে ৩ ফুট দূরত্বে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল নিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে একজন ক্রেতা ৫ কেজি করে চাল ক্রয় করতে পারবে বলে জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে। উল্লেখ্য, প্রতিটি পয়েন্টে ২ টন করে চাল সরবরাহ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *