11:13 PM, 12 November, 2025

ভারতের হাসপাতালের ৬০ ভাগ রোগী বাংলাদেশি

sankara_nethralaya

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ে প্রতিবছর গড়ে ৫৬ হাজার বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসা নিতে যান। এই রোগীর পরিমাণ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নেয়া মোট বিদেশিদের ৬০ শতাংশ বলে জানান হাসপাতালটির পরিচালক ডা. গিরিশ শিবা রাও।

৮ মার্চ, রবিবার হাসপাতালে বাংলাদেশি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান তিনি। এমন খবর প্রকাশ করেছে ঢাকা ট্রিবিউন।

এ বিষয়ে ডা. গিরিশ বলেন, প্রতিবছরই শঙ্কর নেত্রালয়ে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা ৫ থেকে ৭ শতাংশ হারে বাড়ছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো পরিসংখ্যান তিনি দেখাতে পারেননি।

শঙ্কর নেত্রালয় ভারতের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় চক্ষু হাসপাতালগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং ওমানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ চিকিৎসা নিতে যান। হাসপাতালটির ৭০ ভাগ রোগীই তামিলনাড়ুর বাইরের।

বাংলাদেশ থেকে কেন এতো রোগী শঙ্কর নেত্রালয়ে আসেন- এর জবাবে ডা. গিরিশ বলেন, ‘এর কারণ হচ্ছে, এই হাসপাতালে খুব কম খরচে গ্লুকোমা, রেটিনা, অকুলোপ্লাস্টি, স্কুইন্ট, পেডিয়াট্রিক ক্যাটারাক্ট, কর্নিয়াল ট্রান্সপ্ল্যান্টসহ বিভিন্ন জটিল অস্ত্রপচার করা হয়।’

প্রতি রবিবার হাসপাতালের সাত তলায় জেনারেল ওয়ার্ডে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। শঙ্কর নেত্রালয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে বাংলাদেশের কিশোর ইমতিয়াজ (১১)। চট্টগ্রামের ফাতিয়াবাদ হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ইমতিয়াজ। সদর নামের পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে তিনি চেন্নাইতে আসেন।

এ বিষয়ে সদর জানান, এক বছর আগে ইমতিয়াজের মাথায় ফুটবলের আঘাত লাগে। কিন্তু সে সময় পরিবারের কাউকে বিষয়ে জানায়নি ইমতিয়াজ। এক বছর পর তার চোখের সমস্যা ধরা পড়ে। ইমতিয়াজকে চট্টগ্রাম ও ঢাকার চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকরা জানান, অস্ত্রোপচার করা হলে তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ। এরপরই তাকে ভারতের শঙ্কর নেত্রালয়ে নিয়ে আসা হয়।

তিনি আরো জানান, এই হাসপাতালে ইমতিয়াজের এক চোখে অস্ত্রপচার করেছেন চিকিৎসকরা। এতে খরচ এসেছে ৪২ হাজার রুপি। চোখে আরো একটি অস্ত্রপচার করা হবে। সেখানে খরচ পড়বে ৯০ হাজার রুপি। ইমতিয়াজের চোখ পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তারা।

১৯৭৪ সালে শঙ্কর নেত্রালয়ের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ১৯৭৮ সালে এটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত হয়। অনুদান ও রোগীদের চিকিৎসা ফি বাবদ দেয়া অর্থ দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত হয়। ভারতে যাদের মাসিক আয় ১২ হাজার রুপির কম তাদের এখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দেয়া হয়। বর্তমানে শঙ্কর নেত্রালয়ের সারা ভারতে একাধিক শাখা রয়েছে।