বৃষ্টিতে ভেজা কুড়িয়ে পাওয়া অজ্ঞাত নবজাতকের দায়িত্বে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার দম্পতি

আশরাফুল ইসলাম
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধা জেলা সারাদেশ ব্যাপী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ ঘটেছে । আবারো প্রতিনিয়ত থাকছে নিত্য নতুন সব ঘটনা যার বাস্তবতা আজ ও বিগত বিভিন্ন সময়। সব কিছুতেই অনেকেই গা বাঁচাতে পারলেও পুলিশ তারা গা বাঁচাতে পারে না । বাংলাদেশ পুলিশ আজ শত চেষ্টা চালিয়েও সাধারণ মানুষ আজও আইনের প্রতি যেমন শ্রদ্ধাশীল নয় তেমনি পুলিশ বাহিনীতেও সামান্য কিছু কর্মকর্তা আছেন যারা নিজের সত্যতা ধরে রাখতে পারেনি। এক্ষেত্রে জেলায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে নেতৃত্ব দিতে একজন দক্ষ চালকের প্রয়োজন হয়। আমাদের জেলা পুলিশের সর্বোচ্চ পদধারী কর্মকর্তা শুধু একজন পুলিশ সুপারই নন একজন পরীক্ষিত মানবিক পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বিপিএম (সেবা)।
যিনি জেলায় দায়িত্ব পাওয়ার পর জেলা জুড়ে জুয়া খেলা এখন শুধু স্মৃতি,মাদক এখন জেলা জুড়ে নিস্বপ্রাপ্য,অনেক মাদক কারবারি ,সেবী এখন ভালো হওয়ার অঙ্গিকার করে সুপথে ফিরেছে। সড়কের দূর্ঘটনা রোধে ব্যাপক ভাবে ট্রাফিক বিভাগকে দিকনির্দেশনা দিয়ে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে জনসচেতনতা মুলক কার্মকান্ড পরিচালনা করে দূর্ঘটনার রোধে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি জেলা জুড়ে সকল ধর্মের মানুষকে সমানভাবে দেখেছেন সাধ্য মতো সহযোগীতা করেছেন। অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে ঘর,বস্ত্র,অর্থ,প্রতিবন্ধিদের জন্য বিশেষ সামগ্রীসহ নানা সেবা মুলক কর্মকান্ডে যিনি সর্বদা নিয়োজিত ছিলেন ও এখনও দায়িত্বে আছেন। জেলার সার্বিক আইন শৃংখলা ব্যবস্থা জোড়দার করে সর্বস্তরের মানুষের মন জয় করার পাশাপাশি জেলা পুলিশের সর্বস্তরের সদস্যদের মন জয় করা পুলিশ অফিসার মানবিক পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বিপিএম (সেবা)।
জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা মনোহরপুর ইউনিয়নের গোডাউন বাজার এলাকায় ধানক্ষেতে বৃষ্টিতে ভেজা কুড়িয়ে পাওয়া অজ্ঞাত নবজাতককে উদ্ধার করে শিশুটিকে নিঃসন্তান গাইবান্ধা জেলা কর্মরত একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা দম্পতিকে দত্তক দিয়ে এক মানবিক অবদান রাখলেন গাইবান্ধার মানবিক পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম (সেবা)।
প্রসঙ্গত উলেখ্য যে, গত ১৬ এপ্রিল ভোরে পলাশবাড়ী উপজেলার গোডাউন বাজার এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে কাপড়ে মোড়ানো অব¯হায় বৃষ্টিতে ভেজা অসুস্থ শিশুটিকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় হরিণাবাড়ী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকে খবর দেয়া হলে তারা তাৎক্ষনিকভাবে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটির চিকিৎসা সেবাসহ তার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন গাইবান্ধা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম। এসময় শিশুটির জীবন রক্ষায় শহরের প্রফেসর কলোনির খন্দকার শরীফ আহম্মেদের স্ত্রী শামীমা আক্তার সুমনা টানা ছয়দিন ধরে তাকে বুকের দুধ পান করানোসহ মাতৃত্বে দিয়ে আসছিলেন। শিশুটি নিতে দেশ বিদেশ থেকে নানা ভাবে নানান জন যে কোন শর্তে শিশুটিকে গ্রহন করতে চায়। এমতবস্থায় জেলা পুলিশ সুপার জেলা প্রশাসকের নিকট হতে শিশুকে দত্তক প্রদানে একটি যাচাই বাছাই কমিটি করা হয়। শিশুটির মঙ্গল কামনা করে এ দত্তক প্রদান যাচাই বাছাই কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নবজাতক শিশুটিকে সুস্থ্য অবস্থায় জেলায় কর্মরত একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার দম্পতিকে দত্তক প্রদান করা হয়। এ দম্পতি নিজেদের পরিচয় না প্রকাশ করতে চাওয়ায় তাদের নাম গোপন রাখা হয়।
গত ২১ এপ্রিল রোববার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া জানান, শিশুটি উদ্ধারের বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও তার পরিচয় বা স্বজনদের সন্ধান পাওয়া যায় নি সে জন্য শিশুটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহী এক দ¤পতির কাছে শিশুটিকে দত্তক দেয়া হয়েছে। দত্তক গ্রহীতা পরিবারের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গাইবান্ধার সরকারি দপ্তরের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ¤পতি ছেলে শিশুটির দায়িত্ব নিয়েছেন। জন্মদিয়েও শিশুটির পিতা-মাতা সন্তানকে মৃত্যুরদ্বার প্রান্তে ফেলে গেলেও পুলিশ এবং দত্তক গ্রহীতা দ¤পতি অসহায় ওই শিশুটির জীবন রক্ষা ও প্রতিপালনে এক মহান ভ‚মিকা পালন করেছেন। যা স্থানীয় জনমনে সার্বিক প্রশংসা অর্জন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে গাইবান্ধা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান, পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিফজুর আলম মুন্সিসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও জেলার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শিশুটি পাওয়ার পর হতে পুলিশের সহায়তায় মানবিক একজন মা শিশুটির দেখ ভাল করেছেন। তিনি শিশুটি কে দত্তক পাওয়া আশা ও আবেদন করেছেন। কিন্তু যাচাই বাছাই কমিটির সিদ্ধান্ত ক্রমে শিশুটির সর্বময় কল্যাণ কামনা করে একটি সফল ও সুখী পরিবারের নিকট দত্তক প্রদান করেছেন। যেটি সকলের নিকট গ্রহনযোগ্য সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়েছে। এজন্য জেলার সর্বস্তরের মানুষ মানবিক পুলিশ সুপারের কর্মময় সময়ে আরো সাফল্য কামনা করার আশা ব্যক্ত করেন। কয়েকজন লোক এটা নিয়ে ধর্মীয় বিষয় তুলে এবং মানবিক দুধমাতার পক্ষে নিয়ে না সমালোচনা করছেন। আসুন সমালোচনা নয় মানবিক সহায়তা প্রদানে নিজ নিজ অবস্থান হতে নিঃস্বার্থ মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসি।
