আফগানিস্তানের ৩ স্কুলে ধর্ষণের শিকার ১৬৫ ছাত্র

আফগানিস্তানের লোগার প্রদেশের তিনটি স্কুলের অন্তত ১৬৫ ছাত্র যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। ওইসব ছাত্ররা নিজ স্কুলের শিক্ষক ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের হাতেই যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস কে ধর্ষিত ছাত্রদের কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা কখনো স্কুলের ভেতরে আবার কখনো অভিযোগ জানাতে গিয়ে কর্মকর্তার কাছেই ধর্ষিত হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর আফগানিস্তানজুড়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আফগানিস্তানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে।
দেশটির ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অব সিকিউরিটিজের মুখপাত্র এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। লোগারের প্রাদেশিক সরকারের গভর্নর মোহাম্মদ আনোয়ার আশাকজাই ছাত্রদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। তবে আনোয়ার আশাকজাই বলেন, ‘যদি এসব তথ্য মিথ্যা ও অসঙ্গতিপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয় তাহলে এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’
এদিকে ছাত্রদের ওপর ধর্ষণের অভিযোগ অনুসন্ধানের বিষয়টি স্থানীয় টোলো নিউজকে বলার পর লোগার ইয়ুথ, সোশাল অ্যান্ড সিভিল ইনস্টিটিউশনের প্রধান মোহাম্মদ মুসা ও তার এক সহকর্মী এহসানুল্লাহ হামিদিকে গোয়েন্দা সংস্থা তুলে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার থেকে মুসার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
এ বিষয়ে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেন, ‘ঘটনা সত্য হলে এটি খুবই ভুল কাজ হয়েছে।’
লোগার ইয়ুথ, সোশাল অ্যান্ড সিভিল ইনস্টিটিউশন যে তিনটি স্কুলের ছাত্রদের ওপর যৌন নির্যাতন নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে তার মধ্যে হামিদ কারজাই হাই স্কুলও আছে। প্রতিষ্ঠানটির এক ছাত্র জানিয়েছে, ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল না করানোর বিনিময়ে এক শিক্ষক স্কুলের লাইব্রেরিতে ধর্ষণ করেছিল।
একই বিদ্যালয়ের ১৭ বছর বয়সী আরেক শিক্ষার্থী একই অভিযোগ করেছে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে।
ছাত্ররা এসব অভিযোগ স্থানীয় কর্মকর্তা কিংবা পুলিশদের কাছে নিয়ে গেলে সেখানেও তাদের যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে বলেও জানিয়েছে মুসার সংগঠনটি। লোগারের পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের ওপর যৌন নির্যাতন ‘বাচা বাজি’ নামে পরিচিত, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার এ ধরনের নির্যাতনের ক্ষেত্রে শাস্তির ব্যবস্থা করলেও দুর্গম এলাকাগুলোতে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
লোগারের যে তিনটি স্কুলে ছাত্রদের ধর্ষিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে একটির এক শিক্ষকও বলেছেন, এটা অনেকটা মহামারি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠানেও ১৩ শিক্ষার্থীকে পেয়েছি, যারা স্কুলের শিক্ষকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
