ইরানে শক্তিশালী ভূকম্পন, নিহত ৫

ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনা আরো অন্তত ১২০ জনের আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। আজ ৮ নভেম্বর, শুক্রবার ভোররাতে এ ভূমিকম্পটি আঘাত হানে বলে জানিয়েছে দেশটির ইংরেজি গণমাধ্যম প্রেস টিভি।
তারা জানায়, প্রাদেশিক রাজধানী তাব্রিজ থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে তার্ক শহরের আশপাশে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৫.৯। ভূমিকম্প শুরু হলে আতঙ্কগ্রস্থ হাজারো জনতা ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিসি) আশঙ্কা করছে, এ ভূমিকম্পে ১০০ থেকে ‘ হাজার মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। আর ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূতাত্ত্বিক জরিপ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি ইরানের প্রায় দুই কোটি মানুষ অনুভব করেছেন এবং সম্ভবত প্রতিবেশী তুরস্ক থেকেও তা অনুভূত হয়।
ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎসস্থল হওয়ায় বেশি মাত্রায় এর প্রভাব পড়েছে। মূল ভূমিকম্প আঘাত হানার পর আশপাশের শহরগুলোতে দুই দফায় ৪.১ এবং ৪.৮ মাত্রার আফটার শক অনুভূত হয়।
পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের প্রধান মোহাম্মদ বাকের হোনার জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অন্তত আটটি উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক খবর অনুযায়ী, সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে মিয়ানেহ শহরের কাছে তিনটি গ্রামে। এসব গ্রামের বহু ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ভৌগোলিকভাবে দুটি বড় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের ওপর অবস্থিত হওয়ায় ইরানে প্রায়ই ভূকম্পন হয়। গত কয়েক দশকে বেশ কয়েকটি বড় ভূমিকম্পের মুখোমুখি হয়েছে ইরান।
এর মধ্যে ২০০৩ সালে বাম শহরে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে অন্তত ৩১ হাজার মানুষ নিহত হয়। এর আগ ১৯৯০ সালে উত্তর ইরানে ৭.৪ মাত্রার প্রাণঘাতী আরেক ভূমিকম্পে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত ও ৩ লাখ আহত হয়। সেবারে ৫ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি হারায়। ডজনখানেক শহর ও প্রায় ২ হাজার গ্রাম ধ্বংসস্তূপে ভরে যায়।
এছাড়া ২০০৫ ও ২০১২ সালে আরো দুটি ভূমিকম্পে যথাক্রমে ৬ শ’ ও ৩ শ’ মানুষ নিহত হন।
