সিরাজগঞ্জে স্কুল মাঠে ইউপি সদস্যের মাছ চাষ!

নিজস্ব প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জে ক্লাবের নামে স্কুলের মাঠ দখল করে মাছ চাষ করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে। তিনি শাহজাদপুরের উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। গত ২-৩ মাস ধরে তিনি ওই মাঠে মাছ চাষ করে আসছেন।
২৫ অক্টোবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় হাঁস তাড়াতে গিয়ে ওই পুকুরে মাছ পাহারার জন্য ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক বাল্বের সংযোগ তারে স্পৃষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যুর পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেয়ায় কায়েমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শতাধিক ও পার্শবর্তী কায়েমপুর মাস্টার আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী চরম ঝুঁকির মধ্যে ক্লাস করছেন।
এলাকাবাসী জানান, ২-৩ মাস আগে স্কুলের মাঠে মাছ ছাড়া হয়। গত বছর না করলেও এর আগের বছর সেখানে মাছ চাষ করেন অভিযুক্ত ইউপি সদস্য। শুক্রবার সন্ধ্যায় হাঁস তাড়াতে গিয়ে ওই মাঠের মাছ পাহারার জন্য ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে মারা যান কায়েমপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি জয়নাল প্রামাণিক কালুর স্ত্রী ইসমত আরা (৩০)। ২৬ অক্টোবর, শনিবার ভোরে স্কুলমাঠের পানি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান হাসিবুল হক হাসান বলেন, ‘স্কুলের পাশের খেলার মাঠে ঘের দিয়ে ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য ইকবাল মাছ চাষ করছেন। হাঁস তাড়াতে গিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানে গৃহবধূ ইসমতের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর দায় ইকবাল কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।’
মাছ চাষের বিষয়ে ইউপি সদস্য ও কায়েমপুর তরুণ সংঘের সভাপতি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া খেলার মাঠটি স্কুলের। কায়েমপুর তরুণ সংঘ ও ওই খেলার মাঠের উন্নয়নে বন্যার পানি থাকা পর্যন্ত সেখানে মাছ চাষ করা হয়। এর কিছু মাছ এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের দেয়া হয়। বাকিটা বিক্রি করে মাঠ ও ক্লাবের উন্নয়ন করা হয়।’
এ বিষয়ে কায়েমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তানজিলা চৌধুরী বলেন, ‘মাঠটি স্কুলের নয়। তাই এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।’ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ঝুঁকির মধ্যে পাঠগ্রহণ করলেও কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি-এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এদিকে কায়েমপুর মাস্টার আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হাফিজা পারভীন জানান, মাছ চাষের বিষয়টি তার জানা নেই। মাছ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘এগুলো মিথ্যা কথা।’
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক এ বিষয়ে বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে আগে অবগত করা হয়নি। তাইলে আগেই ব্যবস্থা নেয়া যেত। কেন বিষয়টি জানানো হয়নি ওই প্রধান শিক্ষিকার কাছে জানতে চাওয়া হবে। সঠিক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা বলেন, ‘বিষয়টি জানতাম না। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হবে।’
